ময়মনসিংহ নগরের থানার ঘাট সংলগ্ন হজরত শাহ সুফী সৈয়দ কালু শাহের (রহ) মাজার ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল ৯টা ৪৫ মিনিট থেকে বিকেল ৫টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এ সময় এই নির্দেশনা জারির বিষয়টি এলাকায় মাইকিং করে জনসাধারণকে অবহিত করা হয়। কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম খান বলেন, মাজারের পক্ষে এবং বিপক্ষে একই সময়ে দুই পক্ষের সমাবেশ ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়। এ ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। বতর্মানে এলাকাটিতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে সকালে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুফিদুল আলম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন এলাকার থানাঘাট থেকে ট্রাফিক অফিস পর্যন্ত আজ মঙ্গলবার একাধিক পক্ষ হতে একই স্থানে এবং একই সময়ে সভা-সমাবেশ আহ্বান করা হয়েছে। উক্ত সমাবেশ ঘিরে এলাকায় চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং এর ফলে আইনশৃঙ্খলার মারাত্মক অবনতিসহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা বিদ্যমান রয়েছে। সার্বিক আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে আমার ওপর অর্পিত ক্ষমতাবলে আমি মুফিদুল আলম, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, ময়মনসিংহ অত্র এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করলাম।
উক্ত এলাকায় এই নির্দেশনা জারি থাকাকালীন সব ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র বহন ও প্রদর্শন, লাঠি বা দেশী অস্ত্র বহন ও প্রদর্শন, যেকোনো ধরনের মাইকিং বা শব্দযন্ত্র ব্যবহার, পাঁচ সংখ্যক ব্যক্তির একত্রে চলাফেরা, সভা-সমাবেশ, মিছিল ইত্যাদি নিষিদ্ধ থাকবে। প্রসঙ্গত, হজরত শাহ সুফী সৈয়দ কালু শাহের (রহ) মাজারে গত ৮ জানুয়ারি ১৭৯তম বার্ষিক ওরস উপলক্ষে ব্রহ্মপুত্র নদের পারে কাওয়ালি গানের আয়োজন করেন ভক্তরা। এরপর রাত ১১টার দিকে গানের অনুষ্ঠান শুরুর পর সাড়ে ১১টার দিকে সেখানে হামলা হয়। দ্রুত শিল্পীদের সরিয়ে দেওয়া হয়। মঞ্চ ও চেয়ার গুঁড়িয়ে চলে যান দুর্বৃত্তরা। পরে রাত ৩টার দিকে মাজারে হামলা হয়। এ সময় মাজারের পাকা স্থাপনার কিছু অংশ ও ভেতরে থাকা জিনিসপত্র ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় গত ৯ জানুয়ারি রাতে কোতোয়ালি মডেল থানায় মাজারটির অর্থ সম্পাদক মো.খলিলুর রহমান বাদী হয়ে ১ হাজার ৫০০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা হয়।সর্বশেষ আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় মাজারে হামলা, ভাঙচুর, লুটতরাজ, দান বাক্স ডাকাতি ও কোরান শরীফ পোড়ানোর ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ সুফিবাদ ঐক্য পরিষদ মাজারের সামনে একটি মানববন্ধনের আয়োজন করে। এনিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়।